শিশুই হল, দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। শিশুদের বাল্য কালের শিক্ষা-দীক্ষা যদি ভালো হয়, তবে তাদের আগামী দিন ও ভবিষ্যৎ ভালো হবে। তাতে দেশ, জাতি ও সমাজ তাদের দ্বারা হবে লাভবান ও উপকৃত। এ জন্য শিশুদের শিক্ষা, তালীম, তরবিয়ত ও তাদের চরিত্রবান করে ঘড়ে তোলার প্রতি গুরুত্ব দেয়া, অধিক গুরুত্বপূর্ণ।মাতা-পিতার সাথে সৎ ব্যবহার করা, তাদের খেদমত করা ইত্যাদি বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন। শিশুরা কীভাবে ওজু, গোসল, তায়াম্মুম ও সালাত আদায় করবে, তাও তিনি এ রিসালাটিতে আলোচনা করেছেন। এ ছাড়াও শিশুরা যখন বড় হতে থাকবে, তখন মাতা-পিতার করণীয় কি এবং মাতা-পিতার প্রতি তাদের দায়িত্ব কি হওয়া উচিত; তার একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তিনি তুলে ধরেছেন। আশা করি পাঠকগণ রিসালাটি পাঠ করে উপকৃত হবেন। যদি একজন পাঠকও এ রিসালাটি পড়ে উপকৃত হন, তাহলে আমি ধরে নিব আমার এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা আমার নাজাতের জন্য যথেষ্ট হবে। যেকোনো কাজ করতে গেলেই ভুল-ভ্রান্তি হওয়াই স্বাভাবিক।
জীবনের শুরুতেই শিশুদের ঈমান ও ইসলামের রোকনসমূহ তালীম দিতে হবে, যাতে তারা বড় হয়ে, তা হতে দূরে সরে না যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি:
“এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া কোন হক ইলাহ নাই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল।” অর্থাৎ, আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন ইলাহ নাই আর আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে মুহাম্মদ এর আনুগত্য করা ওয়াজিব।
“সালাত কায়েম করা” : সালাতের আরকান ও ওয়াজিবসমূহ সহ খুশুর সাথে সালাত আদায় করা।
“যাকাত প্রদান করা” : যদি কোন মুসলিম তার মৌলিক প্রয়োজনের বাইরে ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ বা তার সমপরিমাণ অর্থের মালিক হয়, তাহলে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে যখন তার এ সম্পদের উপর এক বছর অতিবাহিত হয়; তখন তাকে শতকরা ২.৫ টাকা যাকাত দিতে হবে। এ-ছাড়াও আরও অনেক সম্পদ আছে যেগুলোর উপর যাকাত ওয়াজিব হয়। সে সব সম্পদের যাকাত শরিয়ত কর্তৃক নির্ধারিত হারে প্রদান করতে হয়।
“বায়তুল্লাহর হজ করা” : হজ তার উপর ফরয হবে, যে হজ করার সামর্থ্য রাখে।
“রমযানের রোজা রাখা:” রোজা বলতে আমরা বুঝি, নিয়ত সহকারে ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খানা-পিনা ও রোজার পরিপন্থী সবধরনের কাজ হতে বিরত থাকা।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমাদের সন্তানদের বিষয়ে ইনসাফ কর।” [বুখারী, মুসলিম]
অর্থাৎ, তোমাদের সন্তানদের বিষয়ে তাদের ধন-সম্পত্তিতে, অনুদানের ক্ষেত্রে ও যাবতীয় সব বিষয়ে তুমি ইনসাফ কর।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,اً
“প্রতিটি নবজাত শিশু ফিতরাত তথা ইসলামের উপর জন্মগ্রহণ করে, তারপর তার পিতা তাকে ইয়াহুদি বানায়, খ্রিষ্টান বানায়, অথবা অগ্নি-উপাসক বানায়। যেমন, চতুষ্পদ জন্তু সে একটি জন্তু জন্ম দেয়, কিন্তু তার মধ্যে কোনটিকেই তুমি কান কাটা দেখতে পাবে না।” [বুখারী]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ,
“কবিরা গুনাহের একটি বড় ধরনের কবিরা গুনাহ হল, কোন লোক তার মাতা-পিতাকে গালি দেওয়া। যেমন, সে কোন লোকের পিতাকে গালি দিল, তখন লোকটিও তার পিতাকে গালি দিল অথবা সে অন্যের মাকে গালি দিল এবং সে লোকও তার মাকে গালি দিল।” [বুখারী, মুসলিম]